China conflict with Taiwan। World War 3 prediction and possibility.... Nancy Pelosi's visit in Taiwan - 2022 United States congressional delegation visit to Taiwan
চীনের রাজপথে প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্রসজ্জিত ট্যাংক ঘোরাফেরা করছে! চীনের যুদ্ধবিমানগুলো নিরন্তর আন্তর্জাতিক airspace border অতিক্রম করে অবাধে তাইওয়ানের নভোক্ষেত্রে ঢুকে পড়ছে! চীন নিজেদের সীমান্ত বরাবর সৈন্য মোতায়েন করে চলেছে। তাইওয়ানের একের পর এক সরকারি ওয়েবসাইটের ওপর cyber attack করা হচ্ছে। এমনই এক উত্তেজনাকর মুহূর্তে আমেরিকার একজন উচ্চবর্গীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের তাইওয়ান যাত্রা এই উত্তেজনায় যেন আরও খানিকটা মসলা ঢেলেছে।
2nd august মধ্যরাতে House of representative এর মুখপাত্র Nancy Pelosi তাইওয়ান পৌঁছান। এই বিষয়টি নিয়ে রীতিমত শোরগোল পড়ে যায় চীনের রাজনৈতিক মহলে। আমেরিকার এই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় আমেরিকার দিকে। অপরদিকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সংঘর্ষ তো রয়েছেই! সব মিলিয়ে বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এক চরম উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সময় বয়ে চলেছে। এসব কি তবে সত্যিই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বাভাস? চীন এবং তাইওয়ানের এই সংঘর্ষের ইতিহাসটাই বা কী?? এবং এই সংঘর্ষের সম্ভাব্য ফলাফল কী?
আসুন এসব নিয়ে বরং বিস্তারিত আলোচনা করা হোক! এটি বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষিতে একটি দারুন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!
আপনারা কি জানেন? চীনে দুটো ভিন্ন সরকারের রাজত্ব রয়েছে! একটি People's Republic of China (PRC) এবং অপরটি Republic of China (ROC)! বর্তমানে আমরা যে ভূখণ্ডটিকে তাইওয়ান বলে চিনি সেই ছোটো দ্বীপের মতো ভূখণ্ডটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার রাজত্ব করেছে। সপ্তদশ শতাব্দীতে (1624-1661) সেখানে রাজত্ব করেছে dutch ব্যক্তিবর্গ। এরপর চীনের Qing রাজবংশ সেখানে রাজত্ব করেছে 1683 থেকে 1895 পর্যন্ত। এরপর প্রথম Sino Japanese war এ চীনের পরাজয়ের পর Treaty of Shimonoseki এর মাধ্যমে জাপান সে ভূখণ্ড টি দখল করে নেয়। তারপর 1945 এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্ত পর্যন্ত এই ভূখণ্ডে জাপান রাজত্ব করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সারা বিশ্বের কাঠামো বদলে যায়। একদিকে পশ্চিমা দেশগুলোতে Western democracy এবং অপরদিকে সোভিয়েতে communist USSR। যখন সারা বিশ্বের দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল কমিউনিস্ট রাষ্ট্র USSR এর ওপর! তখন ধীরে ধীরে চীনের অভ্যন্তরে মাও সেতুং এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পাওয়ার শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। সেমুহূর্তে চীনে রাজত্ব করত Chiang Kai Shek এর Republic of China সরকার। 1949 সালে চীনের অভ্যন্তরে একটি গৃহযুদ্ধ বাঁধে। এই যুদ্ধটি বেঁধেছিল Republic of China (ROC)এর Kuomintang (KMT)-led government এবং Chinese Communist Party এর মধ্যে। ক্রমবর্ধমান সাম্রাজ্যবাদী সংমিশ্রণ (জাপান এবং পশ্চিম উভয়ের থেকে),Qing আদালতের দ্বারা নিযুক্ত বিদেশী মাঞ্চু সরকারের প্রতি হতাশা এবং একটি ঐক্যবদ্ধ চীনকে দেখার আকাঙ্খা ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদকে ত্বরান্বিত করেছিল যা ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে বৈপ্লবিক চিন্তা ভাবনার বিকাশ ঘটিয়েছিল। মাও সেতুং এর নেতৃত্বে Chinese Communist Party এই গৃহযুদ্ধে জিতে যায় এবং ফলশ্রুতিতে Chiang Kai Shek এর নেতৃত্বাধীন Republic of China এর সরকার আজকের তাইওয়ান নামক ক্ষুদ্র দ্বীপটিতে স্থানান্তরিত হয়ে যায়। কিন্তু তারা সর্বদাই মনে করত যে তারাই চীনের প্রধান সরকার এবং Chinese Communist Party অনৈতিকভাবে চীনের মূল ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়েছে। আপনারা যদি ভালোভাবে লক্ষ্য করেন তবে দেখতে পাবেন, 1928 থেকে 1949 সাল পর্যন্ত চীনের পতাকা এবং বর্তমান তাইওয়ানের পতাকা কিন্তু অভিন্ন!! তবে বর্তমান চীনের লাল রঙের পতাকায় তারকা চিহ্নিত রূপটি CCP ( Chinese Communist Party) কে নির্দেশ করে। এই গৃহযুদ্ধের পরবর্তীকালে United Nations তাইওয়ানের সরকারকেই মূল চীন হিসেবে গণ্য করতো। কারণ তাইওয়ানে বিকাশ ঘটেছিল গণতন্ত্রের। যেখানে আমাদের ভারতবর্ষ একটি flawed democracy, সেখানে তাইওয়ানের মতো ছোট্ট দেশটি complete democracy!! কিন্তু খুব শীঘ্রই বোঝা গেল এই সরকারের সমগ্র চীনে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে 1970 এর পর থেকে কমিউনিস্ট পার্টির অধীনস্থ মূল চীন ভূখণ্ডকেই প্রধান চীন হিসেবে গণ্য করা শুরু হলো। বরং বর্তমানে সারা বিশ্বে মাত্র 15 টি দেশ রয়েছে যারা তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করে থাকে।
1949 সালে মাও সেতুঙ এর নেতৃত্বে চিনে সাম্যবাদী বিপ্লব সম্পর্কে বিশদে জানতে চাইলে নিচে দেওয়া button এ click বইটি আপনারা কিনতে পারেন 👇👇
Origins of the Chinese Revolution, 1915-1949
অথবা চীন ও তাইওয়ানের সংঘর্ষ সম্পর্কিত এবং চীনের যাবতীয় স্ট্র্যাটেজি সংক্রান্ত বিশদে জানতে হলে নিচে দেওয়া button টিতে click করুণ 👇👇
Haunted by Chaos: China’s Grand Strategy from MaoZedong to Xi -Zinping
Uncharted Strait: The Future of China-Taiwan
RPC এবং CCP এর মধ্যে কখনোই কোনো peace agreementস্বাক্ষরিত হয়নি,এদের মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকে। একদিকে তাইওয়ান সরকার মনে করে যে তারাই চীনের আদি সরকার, তাই তাদের অধিকার আছে সমগ্র চীনে রাজত্ব করার। অপরদিকে কমিউনিস্ট পার্টি একটি One China policy চালু করে, যেখানে তারা তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মানতে নারাজ এবং জানায় শান্তিপূর্ণভাবে যদি এটি করা না যায় তবে চীন এক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে!
মজার ব্যাপার হলো, তাইওয়ান কিন্তু United Nations এর সদস্য নয়, ফলে অফিশিয়ালি আমেরিকাও তাইওয়ানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করে না। তবে তাইওয়ানের সাথে আমেরিকার একটি আনঅফিসিয়াল বন্ধন রয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো পশ্চিমী গণতন্ত্র এবং সাম্যবাদের মধ্যে বিবাদ। সেজন্য president Joe Biden নিজেই বলেছেন, “ we will defend Taiwan if China tries to invade it. "
Lee Teng Hui ছিলেন তাইওয়ানে গণতন্ত্রের জনক। চীন এবং তাইওয়ানের সংঘর্ষটা অনেকটা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সংঘর্ষের সমতুল্য। যদিও ভৌগোলিকভাবে ইউক্রেন রাশিয়ার মূলভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, কিন্তু তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে 130 KM এর দূরত্ব রয়েছে। তাছাড়া পশ্চিমী বিশ্বের কাছে তাইওয়ান এর গুরুত্ব ইউক্রেনের চেয়ে খানিকটা বেশি।
এগুলো গেল ইতিহাসের কথা। এবার আলোচনা করা যাক কিছু বর্তমান-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়। চীন কেন তাইওয়ানকে দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে? আমেরিকাই বা কেন তাইওয়ানকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর?
চীনের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি হল manufacturing এবং export! লক্ষ্য করবেন,আপনি দৈনন্দিন যে সমস্ত জিনিস ব্যবহার করে থাকেন তার অধিকাংশই কিন্তু চীনের প্রোডাক্ট। কেবল এর ওপর ভিত্তি করেই চীন বর্তমান বিশ্বে একটি মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তবে নির্বিঘ্নে বাণিজ্য করতে হলে চীনকে অবাধে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু জাপান,ফিলিপাইন্স,ইন্দোনেশিয়া, বোর্ণীয় প্রভৃতি দেশগুলো চীনকে এক্ষেত্রে বাধা দেয়। একে বলা হয় একটি Island chain। কিন্তু চীন যদি তাইওয়ানে Merchant এবং military base স্থাপন করতে পারে তবে তারা অবাধেই প্রশান্ত মহাসাগরে প্রবেশ করতে পারবে এবং রমরমিয়ে বাণিজ্য করতে পারবে। যা অর্থনৈতিকভাবে চীনের জন্য দারুন লাভজনক হবে, সেকারণে চীন আজ মরিয়া হয়ে উঠেছে।
অপরদিকে চীন যদি তাইওয়ান এ মিলিটারি বেস স্থাপন করে তবে তা আমেরিকার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট আশংকাজনক হবে। কারন তাইওয়ান থেকে চীন সহজেই আমেরিকায় air force, battleship ঢুকিয়ে দিতে পারবে, যা আমেরিকা একেবারেই চায় না। উপরন্তু বর্তমান ডিজিটাল বিশ্বে তাইওয়ান সর্বাধিক পরিমাণ semiconductor এবং chip উৎপাদন করে থাকে। Microsoft,Apple প্রভৃতি বড় বড় কোম্পানিও সেমিকন্ডাক্টর তাইওয়ান থেকেই আমদানি করে। ফলে তাইওয়ানকে হাতে রাখাটা আমেরিকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া তাইওয়ানের GDP 786 billion dollar।
Taiwan চীনের unification এর সমস্তরকম প্রস্তাবই নাকোচ করে দেয়। 2000 সালেই Chen Shui Bian বলেছিলেন যে,“we want complete independence”.
আসলে taiwan এ দুটো বিভাগ রয়েছে - এক, Pan blue coalition, যার নেতৃত্ব দিতো KMT এবং তারা সমগ্র চীন দখলের পক্ষপাতী ছিল। অপরদিকে, Pan green coalition, যার নেতৃত্বে ছিল DPP ( democratic progressive party) যারা বিশ্বাস করতো তাইওয়ান ভৌগলিক গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তারা চীনের মূল ভুখন্ডের সাথে কোনোরকম সংযুক্তিকরণ চাইতো না। তবে এই দুই পক্ষই Chinese Communist Partyএর আধিপত্য মানতে নারাজ ছিল। একটি survey অনুসারে তাইওয়ানের 64% জনতা স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষপাতি, 30.4% জনতা নিজেদের Taiwanese and Chinese উভয় গোষ্ঠীভুক্তই মনে করে এবং 2-5% জনতা নিজেদের মনে করে chinese! অর্থাৎ চীনের অংশ। সুতরাং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতাই তাইওয়ানকে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে পেতে চায়।
যাই হোক, এই ছিল চীন -তাইওয়ান সংঘর্ষের ইতিবৃত্তান্ত! এবার প্রসঙ্গ ওঠে, তবে World war 3 কী ঘটতে পারে? এর উত্তরটা বেশ কঠিন। তবে এখনো এটির সম্ভাবনা অনেক কম। Global Resilience Institute at Northeastern এর founding director Stephen Flynn বলেছেন, “We’re still in the atomic age,I know it feels like we haven’t had to pay attention to that fact for some years, but the reality is that Russia, China and the United States have enough nuclear weapons to destroy the world many times over.” তাছাড়া চীন এবং আমেরিকার বাণিজ্য অনেকাংশই একে অপরের সাথে যুক্ত। সুতরাং যুদ্ধের আর্থিক বিপর্যয় সকলকেই ভুগতে হবে। তাছাড়া চীনের কোনো actual allies নেই, কিছু বাণিজ্যক মিত্র রয়েছে। ভৌগলিকভাবেও চীন খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। আমেরিকার মিত্ররাষ্ট্র চতুর্দিকে ছড়িয়ে রয়েছে।
তবে আমরা এটুকুই কামনা করতে পারি, যেন কোনো মূল্যেই যুদ্ধবিগ্রহ না বাধে। যুদ্ধের ফল কখনো সুখের হয় না, যুদ্ধ কেবল ধ্বংস এবং বিচ্ছেদই বয়ে আনে।
আমার আজকের আর্টিকেলটি The Intellectual Mind বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। Article টি যতোটা পারবেন শেয়ার করুন।
Comments
Post a Comment
If you have any doubts, let me know